রাধারানীর প্রণাম মন্ত্র :
তপ্তকাঞ্চন গৌরাঙ্গী রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানুসুতে দেবী প্রণমামি হরিপ্রিয়ে।।
বাংলা অনুবাদ :
শ্রীমতী রাধারাণী, যাঁর অঙ্গকান্তি তপ্ত কাঞ্চনের মতো এবং যিনি বৃন্দাবনের ঈশ্বরী, যিনি মহারাজ বৃষভানুর দুহিতা এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রেয়সী, তাঁর চরণকমলে আমি আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি জানাই।
শ্রীমতি রাধা রাধারানীর আবির্ভাব তিথি। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে এই তিথিটি পালন করে থাকেন। পদ্মপুরাণে রাধাষ্টমী ব্রত মাহাত্ম প্রসঙ্গে দেবর্ষি শ্রীনারদের প্রতি পরম বৈষ্ণব মহাদেব বলেছিলেন-
হে দেবর্ষি!
ব্রহ্মা প্রমুখ মহান সত্তমগনের নিত্য মহারাধ্যা যিনি, দেবতাগন দূর থেকে যার সেবা করতে ইচ্ছা করেন,
সেই শ্রীশ্রী রাধিকাদেবীকে সতত ভজনা করা উচিত।
এই রাধানাম যে ব্যাক্তি শ্রীকৃষ্ণনামের সঙ্গে কীর্তন করেন, তার মাহাত্ম্ আমি কীর্তন করতে সক্ষম নই, এমনকি শ্রী অনন্তদেবও নন।
প্রপঞ্চ লীলায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অন্তরঙ্গা স্বরূপশক্তি গোলোকেশ্বরী রাধারাণী ভাদ্র মাসে শুক্লা অষ্টমী তিথিতে অনুরাধা নক্ষত্রে সোমবারে মধ্যাহ্ন কালে ব্রজমণ্ডলে শ্রীগোকুলের অনতিদূরে রাভেল নামক গ্রামে শ্রীবৃষভানু রাজা ও কীর্তিদা মায়ের ভবনে সকলের হৃদয়ে আনন্দ দান করে আবির্ভুত হন।
শ্রীমতি রাধারাণীর করুণার তত্ত্ব, এবং রাধাষ্টমী তিথির সম্যক মাহাত্ম প্রাননাথ স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্যতিত আরো কারো পক্ষে বর্ণনা করা সম্ভব নয়।
শ্রী পদ্মপুরাণে (ব্রহ্মখণ্ড ৭/৮) বলা হয়েছে-
একাদশ্যাঃ সহস্রেন যং ফলং লভতে নরঃ।
রাধা জন্মাষ্টমী পুণ্যং তস্মাং শত গুণাধিকম্।।
"একহাজার একাদশী ব্রত পালন করলে যে ফল লাভ হয়, শ্রীরাধাষ্টমী ব্রত পালন করলে তার চেয়ে
শতগুন অধিক ফল লাভ হয়ে থাকে।"
আরও বলা হয়েছে,
*কোটি জন্মের অর্জিত পাপরাশি ভক্তিপূর্ণ রাধাষ্টমী ব্রত ফলে বিনষ্ট হয়।
*সুমেরু পর্বত সমান সোনা দান করলে যে ফল লাভ হয় একটি মাত্র রাধাষ্টমী ব্রত উদযাপন করে তার শতগুন অধিক ফল লাভ হয়।
*গঙ্গা ইত্যাদি সমস্ত পবিত্র তীর্থে স্নান করে যে ফল লাভ হয়, একমাত্র বৃষভানুকন্যার জন্মাষ্টমী পালন করে সেই ফল লাভ হয়।
পদ্মপুরাণে আরো বলা হয়েছে-
রাধাষ্টমী ব্রতং তাত যো ন কুর্য্যাচ্চ মূঢ়ধী।
নরকান্ নিষ্কৃতি নাস্তি কোটিকল্পশতৈরপি।।
"যে মূঢ় মানব রাধাষ্টমী ব্রত করে না, সে
শতকোটি কল্পেও নরক থেকে নিস্তার পেতে পারেনা।"
স্ত্রীয়শ্চ যা না কৃবন্তি ব্রতমেতদ্ সুভপ্রদম। রাধাকৃষ্ণপ্রীতিকরং সর্বপাপপ্রনাশম্।।
অন্তে যমপুরীং গত্বা পতন্তি নরকে চিরম্।
কদাচিদ্ জন্মচাসাদা পৃথিব্যাং বিধবা ধ্রুবম্।।
"যে নারী শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণের প্রীতিকর সর্ব পাপনাশক এই শুভপ্রদ মহাব্রত পালণ করে না, সে জীবনের অন্তকালে নরকে গিয়ে চিরকাল সেখানে যাতনা ভোগ করে। পৃথিবীতে থাকাকালীনও সে দুর্ভাগিনী হয়।"
*এই মহাব্রত করলে শ্রীশ্রী রাধাকৃষ্ণের অভয় পাদপদ্মে অচলা ও অব্যভিচারিনী ভক্তি লাভ হয়ে থাকে।
ঋষি শৌনক মহামতি সূতকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে সূত,
অন্যান্য দেবতাদের উপাসনার চেয়ে শ্রীকৃষ্ণের আরাধনাই শ্রেষ্ঠ বলে জানি।
আরও শুনেছি, তার চেয়েও রাধারানির আরাধনা অধিকতর পুণ্যপ্রদ ও শেষ্ঠ। অতএব
শ্রী রাধার অর্চনা বিষয়ে কোনও ব্রতাদির কথা বলুন।
সূত বললেন, হে ঋষিবর! আমি একটি গোপনীয় ব্রতের কথা বলছি শুনুন।
একদিন দেবর্ষি নারদ শ্রীকৃষ্ণের নিকটে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ভগবান! আপনার শ্রীমুখে অনেক ব্রতের কথা শুনেছি। এখন শ্রীমতি রাধিকার জন্মদিনের ব্রতকথা শুনতে ইচ্ছা করি।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, দেবর্ষি! তুমি আমার পরম ভক্ত। সে জন্য তোমার কাছে বলছি, শ্রবণ কর।
কোনও এক সময় সূর্যদেব ত্রিলোক ভ্রমণ করতে করতে নানা প্রকার ঐশ্বর্য্য দেখে মনে মনে তপস্যার সঙ্কল্প করে, মন্দার পর্বতের গুহায় কঠোর তপস্যা আরম্ভ করলেন। এই ভাবে দীর্ঘ দিন গত হলো। সূর্যের কঠোর তপস্যা আর পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় দেবতারা ভীত হলেন। ইন্দ্র দেবগণ-সহ আমার কাছে এসে সব কথা বলে। আমি বললাম, হে দেবগণ। সূর্য থেকে তোমাদের কোনও ভয় নাই। তোমরা নিজ নিজ স্থানে যাও। আমি সূর্যদেবকে তপস্যা থেকে নিরস্ত করব।
আরও পড়ুন: জানেন দেবতাদের মধ্যে সবার আগে গণেশের পুজো কেন করা হয়?
তারপর আমি সূর্যের কাছে গেলাম। সূর্য আমাকে দেখে খুব আনন্দিত হলেন। তিনি বললেন, হে শ্রীহরি! আপনার দর্শন পেয়ে আমার জন্ম ও তপস্যা সার্থক হল। যিনি সৃষ্টি, স্থিতি, সংহার কর্তা, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর যাঁকে সব সময় চিন্তা করেন, তাঁকে দর্শন করে আমি ধন্য হলাম।
আমি সন্তুষ্ট হয়ে সূর্যকে বললাম, হে দিবাকর! তুমি তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেছ। এখন বর প্রার্থনা কর। তুমি আমার পরম ভক্ত, সে জন্যই তোমাকে আমি দর্শন দিলাম। এই কথা শুনে সূর্য বললেন, হে প্রভু! আমাকে একটি গুণবতী কন্যার বর দিন। আপনি চির দিন সেই কন্যাটির বশীভূত থাকবেন। এ ছাড়া আমার আর কোনও ইচ্ছা নেই।
আমি তথাস্তু বলে তাঁকে বললাম, এই ত্রিলোকে আমি একমাত্র শ্রীরাধিকারই বশীভূত। শ্রীরাধা এবং আমাতে কোনও প্রভেদ নাই। আমি পৃথিবীর ভার লাঘবের জন্য বৃন্দাবনে নন্দালয়ে অবতীর্ণ হব। তুমিও সেখানে বৃষভানু নামে রাজা হয়ে জন্মগ্রহণ করবে। শ্রীরাধা তোমার কন্যারূপে অবতীর্ণ হবেন।
তারপর শ্রীহরি মথুরায় জন্মগ্রহণ করে নন্দালয়ে এলেন। সূর্যদেব বৈশ্যকুলে জন্মগ্রহণ করে বৃষভানু হলেন। গোপকন্যা কীর্তিদার সঙ্গে তাঁর বিবাহ হল।
সূত বললেন, হে ঋষিবর! আমি একটি গোপনীয় ব্রতের কথা বলছি শুনুন।
একদিন দেবর্ষি নারদ শ্রীকৃষ্ণের নিকটে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, ভগবান! আপনার শ্রীমুখে অনেক ব্রতের কথা শুনেছি। এখন শ্রীমতি রাধিকার জন্মদিনের ব্রতকথা শুনতে ইচ্ছা করি।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, দেবর্ষি! তুমি আমার পরম ভক্ত। সে জন্য তোমার কাছে বলছি, শ্রবণ কর।
কোনও এক সময় সূর্যদেব ত্রিলোক ভ্রমণ করতে করতে নানা প্রকার ঐশ্বর্য্য দেখে মনে মনে তপস্যার সঙ্কল্প করে, মন্দার পর্বতের গুহায় কঠোর তপস্যা আরম্ভ করলেন। এই ভাবে দীর্ঘ দিন গত হলো। সূর্যের কঠোর তপস্যা আর পৃথিবী অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় দেবতারা ভীত হলেন। ইন্দ্র দেবগণ-সহ আমার কাছে এসে সব কথা বলে। আমি বললাম, হে দেবগণ। সূর্য থেকে তোমাদের কোনও ভয় নাই। তোমরা নিজ নিজ স্থানে যাও। আমি সূর্যদেবকে তপস্যা থেকে নিরস্ত করব।
আরও পড়ুন: জানেন দেবতাদের মধ্যে সবার আগে গণেশের পুজো কেন করা হয়?
তারপর আমি সূর্যের কাছে গেলাম। সূর্য আমাকে দেখে খুব আনন্দিত হলেন। তিনি বললেন, হে শ্রীহরি! আপনার দর্শন পেয়ে আমার জন্ম ও তপস্যা সার্থক হল। যিনি সৃষ্টি, স্থিতি, সংহার কর্তা, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর যাঁকে সব সময় চিন্তা করেন, তাঁকে দর্শন করে আমি ধন্য হলাম।
আমি সন্তুষ্ট হয়ে সূর্যকে বললাম, হে দিবাকর! তুমি তপস্যায় সিদ্ধিলাভ করেছ। এখন বর প্রার্থনা কর। তুমি আমার পরম ভক্ত, সে জন্যই তোমাকে আমি দর্শন দিলাম। এই কথা শুনে সূর্য বললেন, হে প্রভু! আমাকে একটি গুণবতী কন্যার বর দিন। আপনি চির দিন সেই কন্যাটির বশীভূত থাকবেন। এ ছাড়া আমার আর কোনও ইচ্ছা নেই।
আমি তথাস্তু বলে তাঁকে বললাম, এই ত্রিলোকে আমি একমাত্র শ্রীরাধিকারই বশীভূত। শ্রীরাধা এবং আমাতে কোনও প্রভেদ নাই। আমি পৃথিবীর ভার লাঘবের জন্য বৃন্দাবনে নন্দালয়ে অবতীর্ণ হব। তুমিও সেখানে বৃষভানু নামে রাজা হয়ে জন্মগ্রহণ করবে। শ্রীরাধা তোমার কন্যারূপে অবতীর্ণ হবেন।
তারপর শ্রীহরি মথুরায় জন্মগ্রহণ করে নন্দালয়ে এলেন। সূর্যদেব বৈশ্যকুলে জন্মগ্রহণ করে বৃষভানু হলেন। গোপকন্যা কীর্তিদার সঙ্গে তাঁর বিবাহ হল।
শ্রীরাধার এই জন্ম তিথিতে গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য ও বসন-ভূষণ
দ্বারা শ্রীরাধার পূজা করে, নানা প্রকার মহোৎসব, ক্রীড়া, কৌতুকাদি করতে হয়।
রাধার সখীবৃন্দ, গোপিকাবৃন্দ, কীর্তিদা, বৃষভানু, প্রভৃতিরও পূজা করতে হয়।
তার পর ব্রতকথা শুনে সে দিন উপবাসী থেকে পর দিন বৈষ্ণবদের সঙ্গে প্রার্থনা
করতে হয়। রাধা নামের সঙ্গে কৃষ্ণ নাম যুক্ত করে জপ করলে যাবতীয় মন্ত্র
জপের ফল লাভ হয়। তপ-জপে আমার যেমন সন্তোষ জন্মে, এক বার রাধানাম উচ্চারণ
করলে তার চেয়ে সহস্রগুণ বেশি আমি সন্তোষ লাভ করি।
গোলক বৃন্দাবনে শ্রীরাধার আবির্ভাব"
পরমেশ্বর
ভগবানের দিব্য লীলাপীঠ গোলোক বৃন্দাবন ধামে রাসমণ্ডল নামে একটি স্থান
বিদ্যমান। রাসমণ্ডলে একদিকে শতশৃঙ্গ নামে একটি পর্বত বিরাজিত। এই শতশৃঙ্গ
পর্বতই ভূলোকে গিরিগোবর্ধন রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। বৃন্দাবনে মালতী ও
মল্লিকা ফুলের একটি অত্যন্ত মনোহর কানন বিদ্যমান। যাঁর ইচ্ছামাত্রে সবকিছু
সংঘটিত হয়, সেই জগতপতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ঐ পুষ্পোদ্যানে একটি সুন্দর
রত্নসিংহাসনে বিরাজ করছিলেন।
.
তাঁর চিত্তে লীলাবিলাস উপভোগের বাসনা উদিত হল; আর তাঁর এই লীলানন্দ সুখ
সম্ভোগের অভিলাষ হওয়া মাত্রই তাঁর চিন্ময় শ্রীবিগ্রহের বামভাগ হতে এক পরম
রূপশালিনী দেবী আবির্ভূতা হলেন। তিনি ছিলেন সর্বাভরণ-ভূষিতা এবং শুদ্ধ
ক্ষৌমবসন পরিহিতা। তপ্তকাঞ্চনকান্তি এই দেবী কোটি চন্দ্রের প্রভার ন্যায়
দ্যুতি বিকিরণ করছিলেন। তাঁর অঙ্গপ্রভায় সবকিছু উদ্ভাসিত হয়ে উঠেছিল।
.
তাঁর স্মিতহাস্য বিভাসিত মুখে মুক্তাধবল মনোহর দন্তপংক্তি শোভা পাচ্ছিলো।
তাঁর মুখমণ্ডল শরৎকালীন সরোজের সৌন্দর্যকে পরাভূত করছিল। তাঁর গলদেশে
শোভিত ছিল মালতী পুষ্পের মালা ও হীরক-হার। যেহেতু তিনি রাসমণ্ডলে আবির্ভূত
হন এবং তৎক্ষণাৎ তিনি শ্রীহরির সেবার্থে পুষ্পচয়নে ধাবিতা হন, সেজন্য তিনি
"রাধা" নামে বিদিতা হন। "রা" শব্দাংশ রাসমণ্ডলের নির্দেশক এবং "ধা" শব্দাংশ
ধাবমান, অর্থাৎ ধাবিত হওয়াকে নির্দেশ করে।
.
যেহেতু শ্রীমতি রাধিকা রাসমণ্ডলে আবির্ভূতা হন এবং প্রভুকে রমণাভিলাষী দর্শন করে, তাঁর প্রতি ধাবিতা হন, সেজন্য তাঁর নাম রাধা।
"রাধা পূর্ণশক্তি, কৃষ্ণ পূর্ণ শক্তিমান।
দুই বস্তু ভেদে নাহি শাস্ত্রের প্রমাণ।"
(চৈতন্য চরিতামৃত ১/৪/৮৩)
.
পৃথিবীতে শ্রীমতী রাধারাণীর আবির্ভাব প্রসঙ্গে বিভিন্ন শাস্ত্রে ভিন্ন
ভিন্ন বর্ণনা দেখা যায়। এর একটি কারণ হচ্ছে ভিন্ন ভিন্ন কল্পে বিভিন্ন
রকমের. আবির্ভাব ঘটেছে। গর্গ মুনির কন্যা গার্গীকে পৌর্ণমাসী দেবী শ্রীমতী
রাধারাণীর যে আবির্ভাব-তত্ত্ব বলেছিলেন, সেই তত্ত্ব শ্রীল রূপ গোস্বামী
তাঁর শ্রীললিতমাধব গ্রন্থে বিধৃত করেছেন। এই অাবির্ভাব সম্বন্ধে পৌর্ণমাসী
বিশদভাবে অবগত ছিলেন, কেনোনা তিনি ভগবানের সকল লীলাবিলাসের আয়োজন ও
ব্যবস্থাপনা করেন। তিনি এই তথ্য কেবল যশোদা মাতা ও রোহিণী দেবীকে
জানিয়েছিলেন।
.
বিন্ধ্য
পর্বত বিশালায়তন হিমালয় পর্বতের প্রতি ঈশ্বান্বিত ছিলো। কারণ হিমালয়
পার্বতীকে তাঁর কন্যা হিসাবে পাওয়ায় মহাদেব শিবকে জামাতা হিসাবে লাভ করার
সুযোগ পেয়েছিলেন। বিন্ধ্য
পর্বত এজন্য এমন একজন সৌভাগ্যবতী কন্যাকে লাভ করতে চেয়েছিলেন, যাঁর স্বামী
মহাদেবকেও যুদ্ধে পরান্ত করতে পারবে, এবং এই ভাবে সে রাজেন্দ্র বা
রাজাধিরাজ পদ লাভ করতে পারবে।
.
তাঁর এই অভিলাস পুরণের সংকল্প করে বিন্ধ্য
পর্বত ব্রহ্মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য কঠোর তপস্যা করতে থাকে। কিছু কাল পর
ব্রহ্মা তাঁর কাছে আবির্ভূত হয়ে তাঁর অভিলাষিত বর প্রার্থনা করতে বলে।
কিন্তু "তথান্ত’ বলে বরদানের পর ব্রহ্মা চিন্তা করতে লাগলেন, "এমন কোন
ব্যক্তি আছে, যিনি মহাদেবকে যুদ্ধে পারাজিত করতে পারেন? এটি অসম্ভব।"
.
কিন্তু বর তিনি ইতিমধ্যেই অনুমোদন করেছেন, সেজন্য তিনি উদ্বিগ্ন হয়ে
পড়লেন। তারপর তিনি উপলদ্ধি করলেন যে, ভূলোকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অপ্রাকৃত
লীলা সংঘটিত করার সময় সমাগত হয়েছেঃ কেবল তিনিই মহাদেবকে রণে পরাভূত করতে
পারেন। ব্রহ্মা ভাবলেন, “কৃষ্ণের নিত্য লীলাসঙ্গিনী হচ্ছেন শ্রীমতী
রাধারাণী। যদি বিন্ধ্য-পর্বত
রাধারাণীকে তাঁর কন্যা হিসেবে লাভ করতে পারে, তাহলেই কেবল অামার বর
ফলপ্রসূ হতে পারে। শ্রীমতী কীর্তিদা রাধারাণীর নিত্য মাতা। কিভাবে বিন্ধ্য তাঁকে কন্যা হিসেবে পেতে পারে?"
.
তাঁর বর কিভাবে ফলপ্রসূ হবে তা নিয়ে চিন্তাম্বিত হয়ে ব্রহ্মা শ্রীমতী
রাধারাণীকে পরিতুষ্ট করার জন্য কঠোর তপস্যা শুরু করলেন। যখন তিনি তাঁর
প্রতি প্রীত হলেন, তখন ব্রহ্মা তাঁকে বিদ্ধ্য পর্বতের কন্যারূপে আবির্ভূত
হতে অনুরোধ জানালেন। রাধারাণী সম্মত হলেন, এবং তখন যোগমায়া দেবী ইতিমধ্যেই
রাজা বৃষভানু ও চন্দ্রভানুর স্ত্রীদ্বয়ের গর্ভে থাকা রাধারাণী ও
চন্দ্রাবলীকে বিন্ধ্য পর্বতের স্ত্রীর গর্ভে স্থানান্তরিত করার ব্যবস্থা
করলেন। এর ফলে বিন্ধ্য-ভার্যা দুটি পরমা সুন্দরী কন্যার জন্মদান করলেন।
.
ইতিমধ্যে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মথুরায় আবির্ভূত হয়েছিলেন। ভগবানের আদেশে বসুদেব
শিশুপুত্র কৃষ্ণকে গোকুলে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে যশোদার কাছে রাখলেন,
যিনি.ইতিমধ্যেই একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দান করেছিলেন। বসুদেব কৃষ্ণকে
সেখানে রেখে পরিবর্তে ভগবৎ অাজ্ঞানুসারে যশোদার কন্যাটিকে নিলেন এবং তাঁকে
নিয়ে মথুরার কারাগারে ফিরে এলেন, যেখানে তাঁকে ও দেবকীকে কংস বন্দী করে
রেখেছিলো।
.
বিন্ধ্য পর্বতের স্ত্রী দুই কন্যা সন্তানের জন্মদান করলে। বিন্ধ্য পর্বত
শিশুকন্যা দুটির জন্য সংস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। দুই কন্যাকে
যজ্ঞস্থলে রেখে একজন ব্রাহ্মণ যজ্ঞানুষ্ঠান করছিলেন। গগনচারী পুতনা
যজ্ঞস্থলে দুই রূপবতী কন্যাকে দেখতে পেয়ে তৎক্ষণাৎ তাঁদেরকে ভূমি থেকে তুলে
নিয়ে আকাশ মার্গে উড়ে পালাতে লাগলো। এতে বিন্ধ্যরাজ অত্যন্ত উদ্বিগ্ন হয়ে
ব্রাহ্মণকে ঐ রাক্ষসীকে মন্ত্রোচারণ দ্বারা হত্যা করতে বললেন। রাজার আদেশে
ব্রাহ্মণ মন্ত্রপাঠ করতে লাগলেন, যার ফলে আকাশচারী পুতনা ক্রমশঃ দুর্বলহয়ে
পড়তে লাগলো। দুই শিশুকন্যাকে ধরে রাখা তাঁর পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়লো,
এবং তাঁদের একজনকে সে নীচে নদীতে ফেলে দিলস। ঐ নদী বিদর্ভ রাজ্যের মধ্য
দিয়ে প্রবাতি হচ্ছিলো। বিদর্ভরাজ ভীষ্মক এই কন্যাকে পেয়ে পাঁচ বছর বয়স
পর্যন্ত তাঁকে নিজের কাছে রাখলেন।
.
সে সময় জাম্ববান বিন্ধ্য ও গোবর্দ্ধন পর্বতে বাস করছিলেন। বিন্ধ্যরাজের
অাদেশে জাম্ববান বিদর্ভ গিয়ে সেই কন্যাকে ফিরিয়ে নিয়ে এলেন। তিনি
চন্দ্রাবলী নামে সুবিদিতা হলেন। পুতনা যখন অপর কন্যাটিকে তাঁর বাহুলগ্না
করে নিয়ে উড়ে যাচ্ছিলো, মন্ত্র প্রভাবে সে ক্রমশঃ আর শক্তিহীন হয়ে পড়তে
লাগলো। ব্রজে পৌছানোর পর পুতনা আর চলতে না পেরে ভূমিতে পতিত হলো। সেই সময়
পৌর্ণমাসী দেবী পুতনার কাছ থেকে ঐ শিশু কন্যাকে নিয়ে মুখরার কাছে অর্পণ করে
তাঁকে বললেন, “এই কন্যা তোমার জামাতা বৃষ্ণভানুর সন্তান।"
.
জয় শ্রীমতী রাধারাণী'র জয়।
পরমকরুনাময়
গোলোকপতি সচ্চিদানন্দ ভগবান, পরমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ ও তাঁর একান্ত হ্লাদিনী
শক্তি শ্রীমতী রাধারাণী, হরপার্বতী আর সকল বৈষ্ণব ভক্ত পার্ষদদের
শ্রীচরণকমলে নিরন্তর প্রার্থনা করি, সকলের জীবন যেনো রাধাকৃষ্ণময়তায় পূর্ণ
হয়ে, মঙ্গলময়, কল্যাণময়, প্রেমময়, ভক্তিময়, মুক্তিময়, শান্তিময়, সুন্দরময়
এবং আনন্দময় হয়ে ওঠে। "হরেকৃষ্ণ"
“জয় রাধেশ্যাম"
পুরাকালে সত্যযুগে লীলাবতী নামে এক পতিতা বাস করত।একদিন নগর ভ্রমনকালে এক সুসজ্জিত মন্দিরে রাধাঠাকুরানীর পূজা উদযাপন দেখতে পেয়ে ব্রতীদের কাছে গেলেন।সে তাদের জিঙ্গেস করল,হে পূণ্যাত্মা সকল!তোমরা এত যত্ন সহকারে কোন ব্রত উদযাপন করছ?তদত্তুরে রাধাব্রতিগণ বলতে লাগলেনযেহেতু ভাদ্রমাসে সীতাষ্টমীতে শ্রীরাধিকা আবির্ভুত হয়েছিলেন,আমরা সেই রাধাষ্টমী ব্রত পালন করছি।এই অষ্টমীব্রত গোঘাত জনিত পাপ,স্তেয়জ,ব্রহ্মহত্যাজনিত অথবা স্ত্রীহত্যাজনিত সকল পাপ ই নাশ করতে সক্ষম।
#Sh_Krishna_Priest:
তাদের কাছ থেকে রাধাষ্টমীর মহিমা শ্রবণ করে সেই পতিতাও স্বেচ্ছায় ব্রত পালনে সংকল্প বদ্ধ হলেন এবং ভক্তগণের সহিত যথাযথভাবে ব্রত পালন করলেন।পরদিন সর্পদংশনে তার মৃত্যু হলো।যমদূতেরা ক্রুদ্ধচিত্তে তাকে বন্ধন করে যমালয়ে যাত্রা করলে,শঙ্খচক্রগদাধার বিষ্ণুদূতগণ উপস্হিত হয়ে লীলাবতীর সকল বন্ধন ছেদন করেন।তাকে নিয়ে রাজহংসযুক্ত দিব্য বিমানে করে বৈকুণ্ঠলোকে গমন করলেন।এভাবে অধঃপতিত বেশ্যাও কেবল মাত্র রাধাষ্টমী পালন করায ফলে সকল পাপ মুক্ত হয়ে বৈকুণ্ঠে গমন করলেন।
যে এ রাধাষ্টমী ব্রত পালন করে না শতকোটি কল্পেও তার নরক হতে নিষ্কৃতি নেই।তারা চিরতরে নরকে পতিত হয়।পরবর্তীতে জন্ম হলেও বিধবা হয়।এখন আপনারাই স্বয়ং বিচার করুন এই ব্রত করবেন কি না?
শ্রীশ্রীরাধিকার_অষ্টোত্তর_শতনাম
তপ্তকাঞ্চন গৌরাঙ্গি রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানুসুতে দেবী প্রণমামি হরিপ্রিয়ে॥
আদ্যাশক্তি, শ্রেষ্ঠ নাম জানিবে রাধার। ১
"রাধা" নামে রাশি রাশি পুণ্যের সঞ্চার।। ২
মনোহর মুখ তাই ইন্দুমুখী নাম। ৩
সনাতনী নাম তাঁর খ্যাত সর্ব্বস্থান।। ৪
শ্রীশোকনাশিনী নাম শোক দূর করে। ৫
অনুপমা দিব্য নাম ভবতাপ হরে।। ৬
অমলা নামেতে পাপ করয়ে হরণ। ৭
অংশুমুখী নাম হয় সুখের কারণ।। ৮
অবনী-ধারিণী নাম ধরাধামে ধরে। ৯
অবলা নামেতে দেহে বীরত্ব সঞ্চারে।। ১০
রাধার অপর নাম অচ্যুত-রমণী। ১১
আর এক নাম ইষ্টভক্তিপ্রদায়িনী ৷৷ ১২ অপরাধ-প্রণাশিনী এক নাম তার। ১৩
আপদুদ্ধারিণী নাম জগতে প্রচার।। ১৪
বড় প্রিয় নাম তার কৃষ্ণ-প্রাণেশ্বরী। ১৫
ভক্তের নিকটে তার নাম কুপাঙ্করী।। ১৬
গোকুল-ঈশ্বরী নাম গোকুলনগরে। ১৭
কুঞ্জনিবাসিনী নাম বৃন্দাবন পুরে।। ১৮
কামরূপা তার নাম জানি কামাখ্যায়। ১৯
গোপগণ গোপেশ্বরী নামে গুণ গায়।। ২০
কৃষ্ণভক্তি-পরায়ণী এক নাম তার। ২১
কুঞ্জবিহারিণী নাম জগতে প্রচার ।। ২২
রমণীর রম্যা নাম করেন ধারণ। ২৩
রাসেশ্বরী নাম হয় রাসেতে নর্ত্তন।। ২৪
পাবনে নাম তার কমল-বাসিনী। ২৫
পদ্মগন্ধ অঙ্গে বলি কমল-গন্ধিনী।। ২৬
দয়ার সাগর বলি দয়াময়ী নাম। ২৭
দ্রবময়ী নামে গঙ্গারূপে অধিষ্ঠান।। ২৮
আর এক নাম তাঁর কলুষনাশিনী। ২৯
মঙ্গল করেন বলি আখ্যান কল্যাণী।। ৩০
কন্দর্প-দমনা নামে খ্যাত তিনি হন। ৩১
কৌমারী নামেতে তিনি বিদিত ভুবন।। ৩২
মুখে সদা হাসি তাই হাস্যমুখী নাম। ৩৩
শুভা নামে গৃহে গৃহে তার অধিষ্ঠান।। ৩৪
আর এক নাম তার চরাচরেশ্বরী। ৩৫
ঘোর নামে বিরাজেন শমন-নগরী।। ৩৬
সকলে তাহারে কহে প্রধানা প্রকৃতি। ৩৭ গোবৎস-ধারিণী নামে আছে তাঁর খ্যাতি।। ৩৮
গরবিনী নাম তার আদরের হয়। ৩৯
গীর্ব্বাণী নামেতে ব্রহ্মপুরে পরিচয়।। ৪০
বৃষভানু সুতা নাম গোপের আগারে। ৪১
যশোদাদুলালী নাম যশোদার ঘরে।। ৪২
কৈলাসে শ্রীশিবা নাম জানিবে তাঁহার। ৪৩
ধরেন কালিকা নাম সংগ্রাম-মাঝার।। ৪৪
অলকা নামেতে রন অলকাপুরীতে। ৪৫
বৈজয়ন্তী তাঁর নাম বেদ-বিধিমতে।। ৪৬
অজরা নামেতে তার জরা দূর হয়। ৪৭
প্রতাপিনী নামে হয় প্রতাপের ক্ষয়।। ৪৮
তত্ত্ব না পাইয়া তাই তত্তাতীতা নাম। ৪৯
জগদ্ধাত্রী নাম তাঁর খ্যাত সৰ্ব্বস্থান।। ৫০
স্থিতিরূপা নাম তিনি করেন ধারণ। ৫১
শাস্তা নামে সাধুগৃহে অধিষ্ঠিত হন।। ৫২ ত্রৈলোক্য-মঙ্গলময়ী আর নাম তাঁর। ৫৩
যমুনা নামেতে স্থিতি নদীর মাঝার।। ৫৪
তেজস্বিনী নামে তেজ করেন ধারণ। ৫৫
যজ্ঞেশ্বরী নাম যজ্ঞকারীর সদন।। ৫৬
যোগগম্যা নাম তার যোগশাস্ত্র মাঝে। ৫৭
সুগতিদায়িনী নাম পুণ্যশীল কাছে।। ৫৮
গুণের অতীত তাই নিৰ্গুণা আখ্যান। ৫৯
বিশাল নিতম্ব তাই নিতম্বিনী নাম।। ৬০
নিরাময়ী এক নাম করেন ধারণ। ৬১
পূৰ্ণানন্দময়ী নাম খ্যাত ত্রিভুবন।। ৬২
কৃষ্ণ-অর্ধাঙ্গিনী নামে তাঁহারেই জানি। ৬৩
শমন দমন নামে তাহারেই মানি।। ৬৪
বাগ্দেবীরূপিণী নাম জানিবে তাহার। ৬৫
পরমার্থপ্রদা নাম খ্যাত ত্রিসংসার।। ৬৬
নলিনাক্ষী নামে তারে ডাকে বহুজন। ৬৭ নিধুবন-নিবাসিনী নামে খ্যাত হন।। ৬৮
পরহস্তা নামে তিনি খ্যাত চরাচরে। ৬৯
ব্রজেশ্বরী নামে স্থিতি হয় ব্রজপুরে।। ৭০
বংশীবটবিহারিণী এক নাম তার। ৭১
বিষ্ণুকাস্তা নাম তার সর্ব্বত্র প্রচার।। ৭২
বল্লভী নামেতে তিনি খ্যাত সৰ্ব্বস্থলে। ৭৩
শ্রীব্রতবৎসলা নাম অনেকেই বলে।। ৭৪
ব্রজবাসিপ্রিয়া নাম বিদিত ভুবন। ৭৫
প্রেমাঙ্গী নামেতে তিনি সুবিদিত হন।। ৭৬
বাক্যসিদ্ধা এক নাম জানিবে তাঁহার। ৭৭ ফুল্লেন্দুনিন্দিনয়না এক নাম তাঁর।। ৭৮
আর এক নাম মহামোহবিনাশিনী। ৭৯
তার আর নাম কৃষ্ণ-মহোবিমোহিনী।। ৮০
মহাদেবী নামে তিনি বিদিত জগতে। ৮১
নারীগণ রামা নামে ডাকে একচিতে।। ৮২
এক নাম ধরে দেবী রাসবিলাসিনী। ৮৩
আর এক নাম রত্নালঙ্কারধারিণী।। ৮৪ রত্নামালাবিধায়িনী এক নাম তাঁর। ৮৫
রত্না নাম বিশ্বমাঝে সার হৈল তাঁর।। ৮৬
আর নাম ধরে রাধা হরিণ-নয়না। ৮৭
অন্য নাম আছে শাস্ত্রে সর্ব্ব মনোরমা।। ৮৮
শ্রীরসশেখরী নাম জানিবে তাঁহার। ৮৯
দমনী নামেতে হয় সত্তাপ সংহার।। ৯০
পূর্ণা নামে পুণ্যফল করেন প্রদান। ৯১
নারীশিরোমণি হয় আর এক নাম।। ৯২
শ্রীফলবক্ষোজা নামে তিনিই বিদিত। ৯৩ যুগ্মাঙ্গদবিধারিণী অন্য নামে খ্যাত।। ৯৪
আর এক নাম শ্যামসুন্দরমোহিনী। ৯৫
সুধামুখী নাম তার সর্ব্বশাস্ত্রে শুনি।। ৯৬
সীমস্তিনী নাম তাঁর অনেকেই কয়। ৯৭
কৃষ্ণকুতূহলী তাঁর অন্য নাম হয় ।। ৯৮
সিন্ধুকন্যা নাম তার সর্ব্বত্রই শুনি। ১৯
আর এক নাম ভবসাগরতরণী।। ১০০
ক্ষমাবতী নাম তিনি করেন ধারণ। ১০১
শ্রীহংসগামিনী নাম বিদিত ভুবন।। ১০২
সদারঙা নাম তার শুনিবারে পাই। ১০৩
হেমরম্ভা নাম পুনঃ শুনি ঠাই ঠাই ৷৷ ১০৪
অনেকে ডাকেন তারে নামেতে ভূ-মাতা।। ১০৫ বরপ্রার্থিগণ তাঁরে কহেন বরদা।। ১০৬
ধাত্রী নামে অভিহিত হন বহু স্থানে।। ১০৭
কান্তি নামে কেহ কেহ তাহারেই ভণে।। ১০৮
শ্রীরাধার নামমালা হৈল সমাপন।
জয়জয় রাধা কর উচ্চারণ।
জয় রাধে জয় রাধে জয় রাধে
#_ফলশ্রুতি
রাধানাম-শতাষ্টক পড়িলে শুনিলে।
ইষ্টসিদ্ধি হয় তার সেই পুণ্যফলে।।
মন্ত্রসিদ্ধি জপসিদ্ধি সৰ্ব্বসিদ্ধি হয়।
ধৰ্ম্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ সিদ্ধি সুনিশ্চয়।।
বাঞ্ছাসিদ্ধি হয় তার সেই পুণ্যফলে।
প্রেমপূর্ণ ভক্তি জন্মে শাস্ত্রে হেন বলে।।
তার গৃহে লক্ষ্মী সদা করে নিবসতি।
মুখে সদা বিরাজিত রহে সরস্বতী।।
যতেক পাতক তার হয় বিমোচন।
অন্তকালে যায় সেই গোলোক-ভবন ।।
ইতি—শ্রীশ্রীরাধার অষ্টোত্তর শতনাম সমাপ্ত।
তপ্তকাঞ্চন গৌরাঙ্গি রাধে বৃন্দাবনেশ্বরী।
বৃষভানুসুতে দেবী প্রণমামি হরিপ্রিয়ে॥
জয় রাধে
0 Comments