💞শ্রীল জয়পতকা স্বামী গুরুমহারাজের প্রশ্নত্তোর🙏❤️

 

শ্রীল জয়পতকা স্বামী গুরুমহারাজের প্রশ্নত্তোর

প্রশ্নঃ হরে কৃষ্ণ। দন্ডবত প্রনাম।আমার প্রশ্ন কনিষ্ঠ অধিকারী ও মধ্যঅধিকারী কি ভগবত ধামে ফিরে যেতে পারে? যে ব্যাক্তি দিক্ষীত হয়েছে এবং হরেকৃষ্ণ জপকীর্তন করছে কিন্তু তার ভগবানের প্রতি রুচি হয় নি এই ধরনের ব্যক্তি যদি দেহ ত্যাগ করে সে কি ভগবত ধামে ফিরে যেতে পারবে?

উত্তর ঃযদি মৃত্যুর সময় তুমি কৃষ্ণের চিন্তা কর তাহলে তুমি ভগবত ধামে ফিরে যাবে এবং তুমি যদি সারাজীবন হরিনাম জপ করে যাও এবং সবকিছু কৃষ্ণের জন্য করে যাও তাহলে এমনি মৃত্যুর সময় কৃষ্ণ তোমার চিন্তা করবে।

প্রশ্নঃআমার প্রশ্ন গুরুমহারাজ যখন আমি ভাগবতম অধ্যায়ন করি তখন প্রায় কিছু শ্লোক ভূল উচ্চারণ করে ফেলি বা শ্লোক বলার যে ৪টি ছন্দ থাকে ঠিক সেইভাবে ছন্দের মাধ্যমে শ্লোক গুলো অধ্যায়ন করতে পারি না এক্ষেত্রে কি আমার ভাগবত চরনে অপরাধ হচ্ছে? এ ব্যাপারে যদি কিছু বলেন গুরুমহারাজ।

উত্তর ঃ একটা লীলা আছে দক্ষিণ ভারতে।একজন ব্রাহ্মণ্ ছিলো। যে ভূল করে গীতা পাঠ করছিল।কিন্তু তখন কিছু মহিলা ও শিশু তাকে পরিহাস করে। কিন্তু উনি কাঁদছিলেন।তো চৈতন্য মহাপ্রভু জিজ্ঞেস করলেন তিনি কেন কাঁদছেন।দেখে মনে হচ্ছিল যেন এই সব শিশুরা হাঁসছে বলে উনি কাঁদছিলেন। কিন্তু উনি মহাপ্রভুকে বললেন যে আমি চিন্তা করছি কৃষ্ণ তিনি কিভাবে অর্জুনের রথের সারথি হলেন।কিভাবে রথের দড়ি ধরে টানছেন।তো আমি এটা ভেবে কাঁদছি।তখন চৈতন্য মহাপ্রভু তাকে আলিঙ্গন করলেন এবং বললেন,তুমি হলে গীতার আসল পন্ডিত। তো এই লীলা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে, যদি কিছু গীতার শ্লোক ভূল উচ্চারণ করি তাতে কিছু যায় আসে না।কোনটা মূল্যবান, সেটা হচ্ছে আমাদের যদি কৃষ্ণের জন্য প্রেমভক্তি থাকে।

প্রশ্নঃগুরুমহারাজ সম্প্রতি আমি একজন ভক্তকে বলতে শুনেছি, তিনি বলছেন যে,বিশেষ করে শিশু ও অল্প বয়সীদের পক্ষে তারা শ্রীমদ্ভাগবত এর শ্লোকের যে অনুবাদ গুলো সেগুলো তারা পড়ে যাক এবং তারা কাহিনি যখন শুনবে তখন এটার মধ্যে আসক্তি জন্মাবে এবং তারপর তারা তাৎপর্য গুলো পড়বে।যেহেতু ভাগবতগুলো অনেক বিশাল।এ বিষয়ে আপনার অভিমত কি জানাবেন।

উত্তর ঃ যতটুকু পড়া যায় না কেন যতদুর পড়া যায় সেটাই ভালো।কিন্তু আমি মনে করি যে,তাৎপর্য গুলোর মধ্যে প্রচুর অমৃত থাকে।এবং এরা যদি এই তাৎপর্য গুলো না পড়ে তাহলে তারা বঞ্চিত হবে।যাই হোক,তারা যেটুকু পড়বে সেটুকুই মঙ্গলজনক।

প্রশ্ন ঃ হরে কৃষ্ণ, গুরুদেব। প্রনাম।আমার ৩টি পুত্র আছে। এবং তাদেরকে জীবনের প্রথম থেকেই শিশুকাল থেকে জড়জাগতিক শিক্ষাই শিক্ষিত করব নাকি সম্পূর্ণ ভগবত শরনাগতির জন্য তাদের মায়াপুর গুরুকুলে পাঠাব?

উত্তর ঃ আমাদের মায়াপুরে ৩টি বিদ্যালয় আছে। ১টি হচ্ছে প্রথাগত গুরুকুল বিদ্যালয়। ১টি হচ্ছে ভারতীয় সিলেবাসযুক্ত বিদ্যালয় এবংআর ১টি কেমব্রিজ এর সিলেবাসযুক্ত বিদ্যালয় এবং তার সাথে সাথে কিছু পারমার্থিক কার্যক্রম ও থাকে।এমনকি গুরুকুলে তাদেরকে লেখা,পড়া,এবং অঙ্ক শিখতে হয়।কিন্তু গুরুকুলে পারমার্থিক শিক্ষার পরিমান বেশি থাকে কিন্তু অন্যান্য বিদ্যালয় এ লেখাপড়ার পরিমান বেশি এবং পারমার্থিক শিক্ষা কিছুটা থাকে।তাই আমরা পারমার্থিক বিষয়বস্তু সমস্ত বিদ্যালয় গুলোতে দেওয়ার চেষ্টা করছি।তো এটা নির্ভর করে যে আপনি কতটা জড়জাগতিক শিক্ষা আপনার সন্তানদেরকে দিতে চান।যদি আপনি চান যে,তারা মহাবিদ্যালয়ে যাবে, কলেজে যাবে তো এসব বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে।

প্রশ্ন ঃ যদি কখনো ব্যস্ততার কারণে জপমালায় হরিনাম জপ করতে না পারি কিন্তু কাউন্টার মেশিনে হরিনাম জপ করি তবে কি আমি এই মালাগুলো সংখ্যা মালায় ভরবো?

উত্তর ঃ চৈতন্যদেব হাতে জপ করতেন।উনি মালার উপরে সবসময় জপ করতেন না।তো যদি জপ হচ্ছে এবং সেটা কাউন্টারে হচ্ছে তো দুটোর মধ্যে তফাৎ কি?কিন্তু আমরা যথাসম্ভব হয় মালার উপরে জপ করতে চাই।কিন্তু, আমরা যদি কোন কোন ক্ষেত্রে জপমালায় জপ করতে না পারি। তাহলে আমরা যে কাউন্টারে জপ করছি সেটা ভালো।আমাদের মুখ দিয়ে হরিনাম করতে হয়।আমরা মন্দিরে এসে মালায় জপ করব এবং বাড়িতে গিয়ে মালায় জপ করব এক্ষেত্রে কোন অজুহাত নেই।কিন্তু কোন ক্ষেত্রে বাচ্চা যদি মালা ধরে ফেলে,যখন মহিলা বাচ্চাকে দুধ খাওয়াচ্ছে। তো সেক্ষেত্রে কাউন্টারে জপ করলে কোন সমস্যা নেই।